Nazihar News Network
News frzom Nazihar It Solution

যে কারণে দেশে দেশে চীনের গোপন পুলিশ স্টেশন

নিউ ইয়র্ক থেকে গত ১৬ এপ্রিল এমন দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে যাঁদের সঙ্গে চীনের বিদেশে থাকা গোপন ‘পুলিশ স্টেশনের’ যোগাযোগ আছে বলে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন মনে করছে। চীনের কথিত বিদেশি পুলিশ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে কাউকে আটক করার ঘটনা এই প্রথম।

আটক হওয়া দুই ব্যক্তি ম্যানহাটনের চায়নাটাউনের একটি ভবনের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে কার্যক্রম চালানো একটি দাতব্য সংস্থায় চাকরি করছিলেন।

ধারণা করা হয়, শুধু যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নয়, বিশ্বের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশে চীনের গোপন পুলিশ স্টেশন রয়েছে যেগুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান ও ঠিকানা সম্পর্কে জানা যায় না।

শুধু চীন নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় বড় দেশগুলোও বিদেশে ‘পুলিশি কার্যক্রম’ চালায় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।

শীতল যুদ্ধের পুরোটা সময় জুড়ে বহু লাতিন আমেরিকান পুলিশ ইউনিটকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

২০২০ সালে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দর লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে তাদের সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেখানে বহু পুলিশ সদস্যকে পাঠিয়েছিলেন। তবে চীনের গোপন আন্তর্জাতিক পুলিশিং অনেক বেশি বিস্তৃত বলে মনে করা হয়।

প্রাথমিকভাবে জাতিগত চীনা বাসিন্দাদের দ্বারা পরিচালিত এসব ‘পুলিশ স্টেশন’ বিদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিকদের সেবাদানের পাশাপাশি তাঁদের গতিবিধির ওপর নজরদারি করে থাকে।

নিউ ইয়র্ক থেকে গত ১৬ এপ্রিল এমন দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে যাঁদের সঙ্গে চীনের বিদেশে থাকা গোপন ‘পুলিশ স্টেশনের’ যোগাযোগ আছে বলে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন মনে করছে। চীনের কথিত বিদেশি পুলিশ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে কাউকে আটক করার ঘটনা এই প্রথম।

আটক হওয়া দুই ব্যক্তি ম্যানহাটনের চায়নাটাউনের একটি ভবনের ভাড়া নেওয়া ফ্ল্যাটে কার্যক্রম চালানো একটি দাতব্য সংস্থায় চাকরি করছিলেন।

ধারণা করা হয়, শুধু যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নয়, বিশ্বের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশে চীনের গোপন পুলিশ স্টেশন রয়েছে যেগুলোর সুনির্দিষ্ট অবস্থান ও ঠিকানা সম্পর্কে জানা যায় না।

শুধু চীন নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় বড় দেশগুলোও বিদেশে ‘পুলিশি কার্যক্রম’ চালায় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।

শীতল যুদ্ধের পুরোটা সময় জুড়ে বহু লাতিন আমেরিকান পুলিশ ইউনিটকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

২০২০ সালে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দর লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে তাদের সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেখানে বহু পুলিশ সদস্যকে পাঠিয়েছিলেন। তবে চীনের গোপন আন্তর্জাতিক পুলিশিং অনেক বেশি বিস্তৃত বলে মনে করা হয়।

প্রাথমিকভাবে জাতিগত চীনা বাসিন্দাদের দ্বারা পরিচালিত এসব ‘পুলিশ স্টেশন’ বিদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিকদের সেবাদানের পাশাপাশি তাঁদের গতিবিধির ওপর নজরদারি করে থাকে।

২০০৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে চীনের এই ধরনের পুলিশ স্টেশনের কথা প্রথম জানা যায়। সেখানে চীনা নাগরিক ও চীনা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েক দফা হামলা হওয়ার পর সে বছর জোহানেসবার্গে কমিউনিটি অ্যান্ড পুলিশ কোঅপারেশন সেন্টার-এর উদ্বোধন করা হয়।

সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়ই সেন্টারটি উদ্বোধন করা হয়েছিল এবং তার পর থেকে এ পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি এ ধরনের কেন্দ্র দক্ষিণ আফ্রিকায় খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্র চীনা নাগরিকদের তাঁদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ পেতে সহায়তা করে এবং প্রবাসী চীনাদের সংশ্লিষ্ট দেশে দ্রুত খাপ খাইয়ে সবার সঙ্গে মেশার বিষয়ে পরামর্শ দেয়।

চীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে, এগুলো মোটেও পুলিশ স্টেশন নয়; এগুলো মূলত ‘সার্ভিস সেন্টার’ হিসেবে কাজ করে থাকে।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা অনেক আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছেন, চীন ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ব্যবস্থার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশে বিদেশে থাকা চীনা নাগরিকদের গ্রেপ্তার করছে এবং অপারেশন ফক্স হান্টের মাধ্যমে চীনা কর্মকর্তারা ইন্টারপোলকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি নিজের নাগরিকদের সঙ্গে চীন যোগাযোগ করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে।

চীনের গুমের ঘটনার খোঁজখবর রাখা স্পেনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সেফগার্ড ডিফেন্ডার্স-এর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে প্রকাশ দুটি আলাদা প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বে ৫০ টিরও বেশি দেশে চীনের এক শটিরও বেশি এই ধরনের কেন্দ্র সক্রিয় আছে।

তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় জিয়াংসু, ঝেংজিয়াং ও ফুজিয়ান—এই তিনটি প্রদেশ থেকে পুলিশ সংস্থাগুলো বিদেশে থাকা এই চীনা সেন্টারগুলো চালায়। তারা বিদেশ সক্রিয় এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করে থাকে। যে কেন্দ্রগুলো বড় পরিসরে কাজ চালায় সেগুলোকে তারা ‘সেন্টার’ এবং যেগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট পরিসরে কাজ করে সেগুলোকে ‘লিয়াইসন’ হিসেবে ভাগ করে নিয়েছে।

আগে এসব চীনা সেন্টার নিয়ে কারও তেমন কোনো মাথাব্যথা ছিল না। এ বিষয়ে কারও তেমন কোনো মনযোগও ছিল না। কিন্তু গত কয়েক বছরে চীনের সঙ্গে অনেক দেশের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা দেশগুলো এ বিষয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন হচ্ছে।

দেশ ছেড়ে ভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়া চীনা নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করানোর বিষয়ে এই কেন্দ্রগুলোর ভূমিকা ক্রমশই পশ্চিমাদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

সেফগার্ড ডিফেন্ডার্স-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত চীন অপারেশন ফক্স হান্ট নামের একটি বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে বিদেশে থাকা প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার চীনা নাগরিককে চীনে ফিরিয়ে এনেছে।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা অনেক আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছেন, চীন ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ব্যবস্থার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশে বিদেশে থাকা চীনা নাগরিকদের গ্রেপ্তার করছে এবং অপারেশন ফক্স হান্টের মাধ্যমে চীনা কর্মকর্তারা ইন্টারপোলকে পাশ কাটিয়ে সরাসরি নিজের নাগরিকদের সঙ্গে চীন যোগাযোগ করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে।

চীনের এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার রাশ টেনে ধরা ক্রমবর্ধমানভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয় হয়ে উঠছে। কিন্তু নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার হওয়া ওই দুই ব্যক্তি একই সঙ্গে চীনা ও মার্কিন নাগরিকত্বধারী বলে ঘটনাটি চীনা ও পশ্চিমা কর্তৃপক্ষের দ্বৈত নাগরিকদের ওপর কর্তৃত্ব প্রয়োগের সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে মনে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশের নাগরিকত্ব আছে এমন অনেক চীনা লোককে ২০১৭ ও ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী সময়ে চীনের বাইরে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী তাঁদের অন্য স্বজনদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চীনা কর্তৃপক্ষ এই কাজ করে থাকে।

এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত

  • জন পি রুয়েল ওয়াশিংটন ডিসিতে বসবাসরত অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান সাংবাদিক

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.