Nazihar News Network
News from Nazihar It Solution

ভারত–মালয়েশিয়া রুপিতে বাণিজ্য হবে, হতে পারে বাংলাদেশের সঙ্গেও

এখন থেকে মালয়েশিয়ার সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করতে পারবে ভারত। সেই সঙ্গে বর্তমানে যেসব মুদ্রায় মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারত বাণিজ্য করে থাকে, সেসব মুদ্রায়ও বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

সেই সঙ্গে যেসব দেশ বিদেশি মুদ্রার ঘাটতিতে আছে, তাদের সঙ্গেও রুপিতে বাণিজ্য করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ভারতের বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল শুক্রবার বলেছেন, যেসব দেশে মুদ্রার সংকট আছে বা বিশেষ করে ডলারের সংকট আছে, তারা চাইলে ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করতে পারে। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমস–এর

এখন থেকে মালয়েশিয়ার সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করতে পারবে ভারত। সেই সঙ্গে বর্তমানে যেসব মুদ্রায় মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারত বাণিজ্য করে থাকে, সেসব মুদ্রায়ও বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

সেই সঙ্গে যেসব দেশ বিদেশি মুদ্রার ঘাটতিতে আছে, তাদের সঙ্গেও রুপিতে বাণিজ্য করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ভারতের বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল শুক্রবার বলেছেন, যেসব দেশে মুদ্রার সংকট আছে বা বিশেষ করে ডলারের সংকট আছে, তারা চাইলে ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করতে পারে। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমস–এর

ভারত ও মালয়েশিয়ার মধ্যে রুপিতে বাণিজ্য নিশ্চিত করতে কুয়ালালামপুরভিত্তিক ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক অব মালয়েশিয়া (আইআইবিএম) ভারতের ইউনিয়ন ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে ‘রুপিভিত্তিক ভস্ত্রো হিসাব’ খুলেছে।

মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব থেকে নিজের অর্থনীতি সুরক্ষিত রাখতে এই উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের গুরুত্ব এখানেই যে চীন ও রাশিয়ার মতো ভারতও ডলারভিত্তিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে এবং সে লক্ষ্যে ব্যবস্থাও নিচ্ছে। ফলে বিশ্ববাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য আরও কমবে বলেই ধারণা করছেন তাঁরা।

গত বছর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতীয় মুদ্রায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য বাণিজ্য সংগঠন ও ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তার অংশ হিসেবে এবার মালয়েশিয়ার সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য শুরু করতে যাচ্ছে দেশটি।

ইকোনমিক টাইমস–এর খবরে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) দিক থেকে মালয়েশিয়া ভারতের ২৬তম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী। ২০০০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতে মালয়েশিয়ার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি ডলার।

শুধু তা–ই নয়, মালয়েশিয়ায় ভারতের যত যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানি আছে, আর কোনো দেশেই তা নেই। দেশ দুটির মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও আছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত বছর বিশ্বের সব মুদ্রার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি পায়। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বিপদে পড়ে উন্নয়নশীল দেশগুলো। এই বাস্তবতায় অনেক দেশ কারেন্সি সোয়াপ বা মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। অনেক দেশ এই চেষ্টা করছে।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভারত গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাশিয়া, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য শুরু করেছে।

মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা

এদিকে কীভাবে ভারতীয় মুদ্রায় আন্তর্জাতিক লেনদেন হবে, তার কিছু নিয়ম জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্থায়ীভাবে ভারতীয় রুপির গুরুত্ব আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়াতে রপ্তানি বৃদ্ধি করতে হবে। ভারতকে বেশি করে উৎপাদনশীল হয়ে উঠতে হবে। শুরুতে ভারতীয় রুপি সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা না পেলেও ধীরে ধীরে ভারতের উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলো রুপিকে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেবে।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা রাশিয়ার নজির দেন। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, তাঁদের কাছ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস নিতে হলে ইউরোপের দেশগুলোকে ইউরো বা ডলার দিলে হবে না, দিতে হবে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল। ফলে রুবলের মান বৃদ্ধি পায়।

কোনো দেশের মুদ্রাকে তখনই ‘আন্তর্জাতিক’ বলা হয়, যখন তার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লেনদেন করে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে মার্কিন ডলার। এরপরই আছে ইউরোপের মুদ্রা ইউরো। তবে ভারতীয় মুদ্রা অতীতে আন্তর্জাতিক লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ১৯৬০-এর দশকে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও ওমান ভারতীয় মুদ্রা গ্রহণ করত; কিন্তু পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।

ভারত-বাংলাদেশ রুপিতে বাণিজ্য

এদিকে ভারত এক বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করতে মৌখিকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। শিগগির তারা এ বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেবে বলে জানা গেছে।

ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্যের বিষয়টি নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন কিছু প্রশ্নও সামনে চলে এসেছে। যেমন ভারত যে রুপিতে বাণিজ্যের প্রস্তাব দিয়েছে, বাংলাদেশ এত রুপি পাবে কোথায়? ডলারকে রুপিতে পরিবর্তন করে, তারপর রুপিতে আমদানি করলে তাতে কোনো লাভ হবে কি? ভারতের স্বার্থটা কী, আর বাংলাদেশই-বা কেন এতে রাজি হবে?

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮ হাজার ৯১৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয় ভারত থেকে। সেই অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করে ১৯৯ কোটি ডলারের পণ্য। আমদানি-রপ্তানি মিলিয়ে উভয় দেশের মধ্যে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়েছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রুপিতে বাণিজ্যের প্রসঙ্গে সম্প্রতি সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০০ কোটি ডলার রপ্তানির সমপরিমাণ ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্য হতে পারে। তবে এর সঙ্গে বিনিময় হারসহ অনেক বিষয় জড়িত। বাংলাদেশি টাকা এখন না হয় একটু অবমূল্যায়িত, ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি না-ও থাকতে পারে।’

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘ভারতের রিজার্ভের সমস্যা নেই। ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর ক্ষমতা আছে দেশটির। তবে একটি বড় অর্থনীতির দেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে আমাদের।’

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.