Nazihar News Network
News from Nazihar It Solution

অর্ধেকের বেশি শিক্ষক নেই, জীর্ণ ছাত্রাবাস

পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এখন নানা সংকটে জর্জরিত। এর পরতে পরতে এখন দৈন্যদশার ছাপ। শিক্ষকসংকট প্রকট। ছাত্রাবাসগুলোর জরাজীর্ণ দশা। ওয়ার্কশপ ও ল্যাবগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় শিক্ষার্থীরা আধুনিক মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে এ সংকট নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলছে প্রতিষ্ঠানটি।

ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে শহরতলির বায়তুল আমানে ১৯৬৩ সালে স্থাপিত হয় এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। শুরুতে পাওয়ার ও সিভিল টেকনোলজি—এই দুটি বিভাগে ৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। এরপর ধাপে ধাপে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি এবং রেফ্রিজারেশন ও এয়ারকন্ডিশনিং (আরএসি) টেকনোলজি বিভাগ চালু হয়। বর্তমানে ছয়টি বিভাগে প্রতিবছর ১ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। চারটি ব্যাচে দুটি পালায় সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৪৪ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন ক্যাম্পাসটিতে।

পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এখন নানা সংকটে জর্জরিত। এর পরতে পরতে এখন দৈন্যদশার ছাপ। শিক্ষকসংকট প্রকট। ছাত্রাবাসগুলোর জরাজীর্ণ দশা। ওয়ার্কশপ ও ল্যাবগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় শিক্ষার্থীরা আধুনিক মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে এ সংকট নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলছে প্রতিষ্ঠানটি।

ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে শহরতলির বায়তুল আমানে ১৯৬৩ সালে স্থাপিত হয় এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। শুরুতে পাওয়ার ও সিভিল টেকনোলজি—এই দুটি বিভাগে ৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। এরপর ধাপে ধাপে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি এবং রেফ্রিজারেশন ও এয়ারকন্ডিশনিং (আরএসি) টেকনোলজি বিভাগ চালু হয়। বর্তমানে ছয়টি বিভাগে প্রতিবছর ১ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। চারটি ব্যাচে দুটি পালায় সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৪৪ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন ক্যাম্পাসটিতে।

এত শিক্ষার্থীর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষকসংকট প্রকট। অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষক পদ আছে ২০১টি। এর বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৫৫ জন। এর বাইরে ওয়ার্কশপ-ল্যাবের প্রশিক্ষকের পদ রয়েছে ১২৮টি। বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭৪ জন। শিক্ষক-প্রশিক্ষকের মোট ৩২৯টি পদের মধ্যে ২০০টি (৬১ শতাংশ) পদই শূন্য পড়ে আছে। অর্ধেকের বেশি শূন্য পদ পূরণ না হওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানের পাঠদান ও প্রশিক্ষণ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মরত ব্যক্তিরা।

এই প্রতিষ্ঠানের আরএসি বিভাগের পঞ্চম পর্বের শিক্ষার্থী চন্দন বিশ্বাস (২০) বলেন, ‘আমাদের পাইপিং অ্যান্ড ডাকটিং বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় অন্য শিক্ষকেরা তাঁদের নিজেদের ক্লাসের ফাঁকে ক্লাস নেন। এর ফলে সপ্তাহে দু-তিন দিন ওই বিষয়ের ক্লাসই হয় না।’

সরেজমিন

চার সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর এ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে দুটি ছাত্রাবাসে ২০০ জন এবং একটি ছাত্রীনিবাসে ১০০ জনের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি শিক্ষার্থীদের শহরের বায়তুল আমান, চানমারীসহ বিভিন্ন এলাকার মেসে থেকে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। মেসে থাকতে তাদের অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। যারা ছাত্রাবাসে থাকছে, তারা কম টাকায় পড়াশোনা করতে পারলেও ছাত্রাবাসে অনেকটা মানবেতরভাবে থাকতে হচ্ছে। ছাত্রদের ১২০ আসনের তিনতলা ভবন কবি আলাওল ছাত্রাবাস এবং ৮০ আসনের দোতলা ভবনবিশিষ্ট শহীদ তিতুমীর ছাত্রাবাসে সংকটের শেষ নেই।

গত ২২ মার্চ সরেজমিনে কবি আলাওল ছাত্রাবাসে দেখা যায়, ছাত্রাবাসটির জরাজীর্ণ দশা। জানালা ভাঙা, দরজার ছিটকিনি নেই, ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে, বেরিয়ে পড়েছে রড। ওই ছাত্রাবাসে মোট কক্ষ রয়েছে ৪২টি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা ৩৮টি কক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকছে। তিনতলাবিশিষ্ট ওই ছাত্রাবাসে ১৮টি শৌচাগারের মধ্যে সচল আছে ৭টি। বাকিগুলো অকেজো, দরজা নেই ও পানির ব্যবস্থা নেই। গোসলখানা রয়েছে ২৪টি। এর মধ্যে চালু আছে মাত্র দুটি। ছাত্রাবাসের সামনে একটি বড় পুকুর আছে, এই পুকুরে ছাত্রাবাসের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী গোসল সারেন।

আলাওল ছাত্রাবাসের দোতলার পশ্চিম পাশের একটি কক্ষে দেখা যায়, চারটি সিঙ্গেল বেড পাতা রয়েছে। পাশে চারটি টেবিল। ওই কক্ষে ইলেকট্রিক চুলায় রান্নার ব্যবস্থা করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্রাবাসের খাবারের মান ভালো না হওয়ায় এ ব্যবস্থা। দেয়াল থেকে বিছানায় যাতে বালু না পড়ে, এ জন্য দেয়ালের সবদিকে পোস্টার সাঁটানো। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে গেছে। জানালাগুলোর কাচ ভাঙা, সে জায়গা কাগজ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ছাদের অবস্থা খারাপ বলে সিলিং ফ্যান ব্যবহার করা যাচ্ছে না। টেবিল ফ্যান ব্যবহার করতে হয়।

দোতলাবিশিষ্ট শহীদ তিতুমীর ছাত্রাবাসে মোট কক্ষ ২০টি, সব কটি চালু আছে। এখানে ডাইনিং ও টিভি রুম রয়েছে। এ ছাত্রাবাসটির অবস্থা তুলনামূলক ভালো হওয়ায় রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা শিক্ষার্থীরাই কেবল এই ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ পান। এ ছাত্রাবাসে ২৪টি শৌচাগার থাকলেও নিচতলার ১২টি শৌচাগার ব্যবহারের অনুপযোগী।

আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, খরচ কম বলে বাধ্য হয়ে থাকতে হচ্ছে ছাত্রাবাসে। খাবারের মান ভালো না। দুইবেলা খাবারের একই মেন্যু। যে ডাল দেয়, তা পুকুরের পানির মতো পাতলা। সন্ধ্যার পর স্থানীয় বখাটেরা মাদক নিয়ে ছাত্রাবাসে আসে। তারা পাঁচ-সাতজন দলেবলে থাকে। তারা এলে একটি কক্ষ ছেড়ে দিতে হয়।

এসব ব্যাপারে এ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. আক্কাছ আলী শেখ বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে কারগরি শিক্ষার হার ৫০ শতাংশেউন্নীত করতে হলে শিক্ষক-সংকটের সমাধান, আবাসন সমস্যা দূর করা ও ল্যাব আধুনিকীকরণ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ছাত্রাবাস দুটির দৈন্যদশা চরম পর্যায়ে চলে গেছে। এগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ল্যাব সমৃদ্ধ করা এবং শিক্ষক-প্রশিক্ষকের শূন্য পদগুলো পূরণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.