Nazihar News Network
News from Nazihar It Solution

মৃত্যু ও জেল ছাড়া সরে দাঁড়ানোর রাস্তা নেই

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। দল মনোনয়ন দেয় আজমত উল্লা খানকে। দলের বিদ্রোহী হিসেবে মেয়র পদে প্রার্থী হলেও যাচাই-বাছাইয়ে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তবে তাঁর মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়। মায়ের পক্ষে নির্বাচনের মাঠে নামা জাহাঙ্গীর আলমকে গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগ স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীর আলম।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। দল মনোনয়ন দেয় আজমত উল্লা খানকে। দলের বিদ্রোহী হিসেবে মেয়র পদে প্রার্থী হলেও যাচাই-বাছাইয়ে জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তবে তাঁর মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়। মায়ের পক্ষে নির্বাচনের মাঠে নামা জাহাঙ্গীর আলমকে গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগ স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীর আলম।

আপনাকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?

জাহাঙ্গীর আলম: আওয়ামী লীগ একটি বড় দল, আমি জন্মের পর থেকে আওয়ামী লীগ করি। এ জন্য দল যে সিদ্ধান্ত নেয়, তা আমি মানি। বহিষ্কার বিষয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আপনাদের মাধ্যমে, ফেসবুকে, মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি। দীর্ঘ দেড় বছরে কী হয়েছে না হয়েছে এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের সবার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে চেয়েছিলাম। আমার অপরাধটা কী, এটা সামনাসামনি জবাব দিতে চেয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু আমার বিশ্বাস, আমার বিষয়ে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেননি।

আপনার বহিষ্কার করাটাকে যথাযথ মনে করেন কি?

জাহাঙ্গীর আলম: আমাকে কী কারণে বা কেন বহিষ্কার করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমি কোনো চিঠি পাইনি। তাই এটা নিয়ে আর কিছু বলতে পারি না, পারছি না। মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি আমি স্থায়ী বহিষ্কার হয়েছি।

আপনাকে যে শর্ত সাপেক্ষে দলে ফেরানো হয়েছিল, সেগুলো কি আপনি ভঙ্গ করেছেন?

জাহাঙ্গীর আলম: আমি নেত্রীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি, কথা বলতে চেয়েছি। কিন্তু কেউ আমার কথা রাখেনি। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী যে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেখানে একটি আদর্শের জায়গা ছিল। সত্যটা বলার, বোঝার এবং ধারণ করার নেতৃত্বটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেয়েছি। আমি ছয় বছর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, তিন বছর মেয়র ছিলাম। সে হিসেবে হলেও তাঁদের আমার কথা অন্তত ২ মিনিট শোনার দরকার ছিল। আমার কাছে অবিচার করা হয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত নেত্রীর কাছে না বলতে পারব…। নেত্রী যা বলেন, আমি শুনব, শুনি। কিন্তু আমার কথাটা শুনতে হবে। সত্য যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, মিথ্যার ধ্বংস হয় এ জন্য নেত্রীকে বলতে চাই।

দলের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, দলের বিধি মোতাবেক আপনাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আসলে কি তাই?

জাহাঙ্গীর আলম: আমার পার্টির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নেই। পার্টির সিদ্ধান্তে আমি কোনো আলোচনা-সমালোচনা করব না৷ আমার ওপর অন্যায় করা হয়েছে, মিথ্যা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি। আমাকে কোনো শর্ত সাপেক্ষে দলে ফেরানো হয়নি। আমি দল করি। সেখানে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল, সেটার অবসান হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠিতে দুঃখ প্রকাশ করেছি, সে হিসেবে আমাকে দলে নেওয়া হয়েছে। এখানে তো অন্য কিছু বলার থাকে না।

সিটি নির্বাচন নিয়ে এখন আপনার অবস্থান কী হবে?

জাহাঙ্গীর আলম: নির্বাচনে আমি একটা কঠিন জায়গার মধ্যে আছি। একটা হলো আদর্শের জায়গা—আমার পার্টি আওয়ামী লীগ, নৌকা এবং প্রধানমন্ত্রী। তিনটা জায়গা আমার পছন্দের। কিন্তু একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার মা এটার প্রতিবাদ করেছে। আমার মা বলছেন, এই শহরের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। মা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। সে জন্য সন্তান হিসেবে আমি কি মায়ের সঙ্গে থাকব নাকি আজমত উল্লার সঙ্গে থাকব, বলেন? নীতিগতভাবেই আমার মায়ের সঙ্গে থাকতে হয়। এ জন্য আমি মনে করি, যাঁরা আওয়ামী লীগ করেন, তাঁরা আমার অনুভূতির জায়গা, ভালোবাসার জায়গায় রয়েছেন। তাঁরা যেন কষ্ট না পান।

আপনি ও আপনার মা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন কি?

জাহাঙ্গীর আলম: মৃত্যু ও জেল ছাড়া নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর রাস্তা নেই।

আপনার জন্য অনেক কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের জন্য আপনি কী করবেন?

জাহাঙ্গীর আলম: আমি যেহেতু আদর্শের জায়গায় আওয়ামী লীগ করি, সে জন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠন করে তাঁরা অনেকেই আমার মা ও আমার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন। কিন্তু সেখানে তাঁদের থ্রেড (হুমকি) দেয়, বহিষ্কার করে। বিভিন্ন কৌশলে তাঁদের হুমকি দিচ্ছে। আমি চাই যাদের আদর্শ রয়েছে, এই লাখ লাখ মানুষকে যেন হয়রানি না করে। সব প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বলব—জনগণ যে রায় দেয়, জনগণ যেহেতু শহরের মালিক তাই তাদের বিরুদ্ধে যেন অবস্থান না নেয়। ভোটের জায়গায় যেন কোনো পক্ষপাতিত্ব না করে।

নির্বাচনে মায়ের জয় পাওয়ার ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী?

জাহাঙ্গীর আলম: গাজীপুরের মানুষ আমার মা কে ‘নগরীর মা’ বলেন। যখন একজন নারী সবার মা হয়ে যায়, তখন কেউ সেই নারীকে পরাজিত করতে পারে না। আমার বিশ্বাস, আমার মাকে যেহেতু সবাই ‘মা’ বলেছেন, তাই তাঁরা ২৫ তারিখ শুধু আমার মাকে ভোট দেওয়ার জন্য যাবেন। আমার মা লাখ লাখ ভোটে জয়লাভ করবেন।

আপনার স্ত্রী আপনাকে তালাক দিয়েছেন—এমন একটি কাগজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা কতটুকু সত্য?

জাহাঙ্গীর আলম: বিষয়টি আমার খুবই ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক। তাই এটি রাজনৈতিক মাঠে না আনাই ভালো।

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.