আমাদের এখন গভীর অসুখ। কোনো দেশি টোটকায় কাজ হচ্ছে না। ধন্বন্তরি বিদ্যার ঝুলি নিয়ে দুনিয়ার বাঘা বাঘা বৈদ্য আসছেন আমাদের অসুখ সারাতে। কেউ আসছেন আটলান্টিকের ওপার থেকে, কেউ আসছেন আল্পস পর্বতমালার আশপাশ থেকে, আবার কেউ কেউ আসছেন ভলগা, গঙ্গা আর হোয়াংহোর তীর থেকে। একেকজনের ব্যবস্থাপত্র একেক রকম। কারও অ্যালোপ্যাথি, কারওবা হোমিওপ্যাথি, আবার কেউ কেউ আয়ুর্বেদশাস্ত্রে পাকা। ইউনানিও বাদ যাচ্ছে না। নানান কিসিমের দাওয়াইয়ে রোগীর জেরবার অবস্থা। কিন্তু বৈদ্য তাঁর রোগীকে ছাড়ছেন না। অসুখ ভালো করেই ছাড়বেন।
আমাদের নিয়ে দুনিয়ার সবাই ভাবে। আমাদের তো খুশি হওয়ার কথা। কেন জানি মনে হয়, আমরা কামধেনু। সবাই ছুটে আসছে দোহন করতে। একদা যে তরুণের প্রতি রোমকূপ থেকে বিপ্লবের স্লোগান ফেটে পড়ত, পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংস হোক, নিপাত যাক বলে বুলন্দ আওয়াজে একদা যিনি রাজপথ কাঁপাতেন, তাঁরও আজ দেশি বৈদ্যে আস্থা নেই। তাঁদের কারও নজর পুবে, কারও পশ্চিমে।
এ দেশটা ইংরেজের দখলে চলে যাওয়ার পর আমরা বেইমানির কেচ্ছা আবিষ্কার করেছিলাম। আমরা ভেবে সুখ পেতাম ছলে–বলে–কৌশলে তারা আমাদের ওপর দখলদারি কায়েম রেখেছিল দুই শ বছর। আমরা যখন অসহযোগ, হোম রুল, স্বরাজ, স্বাধীনতা—এই সব স্লোগানে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে দিতাম, তখন টেমস নদীর পারের কর্তারা একটা কথা বলত—তারা এখনো নিজেদের দেখভাল করার উপযুক্ত হয়নি। কথাটা শুনতে আমাদের ভালো লাগেনি। আমাদের কবি তখন আহাজারি করে লিখলেন:
এত বছর পর আমাদের মনের কোণে একবারও কি এই কথাটা উঁকি দেয় না যে ইংরেজদের কথা এভাবে ফলে যাবে? আমরা কি অন্যের লাঠি ছাড়া নিজ শক্তিতে হাঁটতে পারছি? পারলে ঘর সামলাতে বিদেশ থেকে ওঝা আনতে হয় কেন?
উপযুক্ত বয়স বলে একটা কথা আছে। যেমন স্কুলে ভর্তির বয়স, চাকরিতে যোগ দেওয়ার বয়স, বিয়ের বয়স, ধর্ম-কর্ম করার বয়স, সন্ন্যাসের বয়স ইত্যাদি। সময় হওয়ার আগে কোনো কিছুতে ঝাঁপ দিলে নানান সমস্যা তৈরি হয়। শরীর-মনে তা সয় না। আমাদের অবস্থা হয়েছে সে রকম।
ইউনিসেফ বলে দিয়েছে, আঠারো বছর বয়স অবধি শিশুকাল। এটা অনেকেই মানে, আবার অনেকে মানে না। কিন্তু আঠারো পেরিয়ে চল্লিশ, পঞ্চাশ কিংবা পঁচাত্তরেও কারও কারও শৈশব শেষ হয় না। তারা নাদান বাচ্চাই থেকে যায়। আমাদের চারদিকে অনেক অশীতিপর শিশুর লাফঝাঁপ দেখি। এতে আমরা কখনো বিনোদন পাই, কখনো বিরক্ত হই। তাদের দেখলে পুরোনো কথা মনে পড়ে যায়—ইংরেজরা তো তাদের কথা ভেবেই একদা বলেছিল—এই শিশুরা এখনো স্বাধীনতার যোগ্য হয়নি।
আমরা শিশুদের ভালোবাসি। আমরা তাদের নিষ্পাপ-ফেরেশতা মনে করি। তবে কেউ যদি আজীবন শিশু থাকতে চায়, তাকে নিয়ে অনেক বিড়ম্বনা হয়। শিশুদের অনেক কথার অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার অনেক সময় এমন কথা বলে, যেন মনে হয় কত জ্ঞানী! ওই সব কথা শুনে আমরা আহ্লাদে তাদের গাল টিপে বলি—এই বুড়া, এই বুড়ি! শিশুও মজা পায়। আমাদের পরিচিত অনেক প্রাপ্তবয়স্ক লোক আছেন, যাঁদের নাম নাবালক মিয়া কিংবা বুড়ি আপা। অনেক জায়গায় এসব নাম পেয়েছি।
অনেক আবেদন–নিবেদন–আন্দোলন করে আমাদের মুরব্বিরা পাকিস্তান হাসিল করেছিলেন। তখন থেকে একটা কথাই শুনেছি তেইশ বছর ধরে—পাকিস্তান শিশুরাষ্ট্র। সদরে আইয়ুব বললেন, আমরা ব্রিটিশ ধাঁচের গণতন্ত্রের উপযুক্ত নই। দেশের মানুষ ঠিকমতো ভোট দিতে শেখেনি। আমাদের দরকার আমাদের আবহাওয়া উপযোগী গণতন্ত্র। তো তিনি চালু করলেন বনিয়াদি বা মৌলিক গণতন্ত্র। আমরা অনেকেই এতে খুশি ছিলাম না।
তারপর আইয়ুব গেলেন, পাকিস্তানও গেল। আমরা পেলাম স্বাধীনতা। আমরা বুক বেঁধে দাঁড়ালাম—এবার গণতন্ত্র হবে। ওমা! একি কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে! তখন সমাজতন্ত্র শব্দটি চাউর হয়েছে। বেশ জনপ্রিয়, সবাই বলে। আওয়াজ উঠল, এ দেশে কোনো বিদেশি ইজম চলবে না। দেশের জলবায়ু–আবহাওয়া উপযোগী সমাজতন্ত্র হবে। চালু হলো নতুন স্লোগান— শোষিতের গণতন্ত্র। সবাই একমত নন। কেউ চায় বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র, কেউ চায় জনগণতন্ত্র, কারও মুখে অন্য বুলি—নয়া গণতন্ত্র। ইংরেজিতে একটা কথা আছে—ফ্রেইজিওলজি। এ দেশে আমরা বলি শব্দের চাতুরী। নানান শব্দ উচ্চারণ করছি। কী বলছি নিজেও জানি না।
জেনারেল জিয়া আরেকটি কথা চালু করেছিলেন—উন্নয়নের গণতন্ত্র। এখন পর্যন্ত আমরা সে পথেই আছি। যথেচ্ছ উন্নয়ন হচ্ছে। রাস্তাঘাট, সেতু আর স্কাইস্ক্র্যাপারে দেশ সয়লাব। তখন খাল কাটার মচ্ছব চলছিল। কিন্তু অনেক খালে পানি আসত না। এখন আলিশান ভবন তৈরি হয়, অফিস কিংবা হাসপাতাল। বছরের পর বছর তা ফাঁকা পড়ে থাকে। কালভার্ট হয় এন্তার। তাতে ওঠানামার অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি হয় না। যত্রতত্র বাড়ির উঠানে কিংবা ধানখেতে আমরা এসব কালভার্টকে বিপুল বিক্রমে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি।
আমজনতা কিন্তু এখনো গণতন্ত্রের জন্য তৈরি হয়নি। সে জন্য বুঝদারেরা অবুঝদের ভোটটা দিয়ে দেন। অবুঝদের আর কষ্ট করে ভোটকেন্দ্রে যেতে হয় না। যাওয়ারই–বা দরকার কী। উন্নয়ন তো হচ্ছে।
নগরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে কৃত্রিম লেক আর না বানালেও চলে। কয়েক ঘণ্টা একটানা বৃষ্টি হলে সব কটি রাস্তা লেক হয়ে যায়। এই দৃশ্য নিত্য দেখি টেলিভিশনে, কাগজের পাতায়। ঢাকা আর চট্টগ্রামকে তখন মনে হয় ভেনিস কিংবা আমস্টারডাম। একসময় শুনতাম, বরিশালকে বাংলাদেশের ভেনিস বলা হয়। ইতালিতে এখন অনেক বাঙালি। তাঁরা এখন বলতে পারেন, ভেনিস ইজ দ্য ঢাকা অব ইতালি। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি কখন অক্সফোর্ডের লোকেরা বলতে শুরু করবে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট।
এখন ভোটের মৌসুম। দিন গণনা চলছে। হাতে আছে বড়জোর পাঁচ মাস। সবার মুখে কমন একটা প্রশ্ন—কী হবে? কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে—কী বুঝছেন? এত কৌতূহল, এত জিজ্ঞাসা আর কোথায় আছে! আমাদের মন দুলছে পেন্ডুলামের মতো। একবার এদিকে যায়, আরেকবার ওদিকে। জানি না, কখন কোথায় গিয়ে এটা থামবে। এর মধ্যেই দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে রাজদূতেরা। কী সলাপরামর্শ হচ্ছে, আমরা জানি না। খবরের কাগজ আর টেলিভিশন, যার যার মতো করে খবর দিচ্ছে, ব্যাখ্যা করছে। এক দেশের রাজদূত এসে ঘুরে যাওয়ার পরপরই আসছে আরেক দেশের রাজদূত। বাংলাদেশ নামের এই কামধেনুর গন্ধে রেসের ঘোড়ার মতো ছুটছে আমাদের কর্তারা। কিন্তু তাদের পিঠে সওয়ার হচ্ছে ভিনদেশের লোকেরা। প্রশ্ন হলো রেস জেতা হবে কি ঘোড়ার পেশির ক্ষমতায়, না সওয়ারির ঘিলুর জোরে!
দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং শুরুর ৯ বছরে নারী ও পুরুষ ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা প্রায় সমান সমান। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি গত জুনে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৩। এর মধ্যে প্রায় ৪৯ শতাংশ নারী ব্যাংক হিসাবধারী ও ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ হিসাবধারী। বাকি ১ শতাংশের বেশি হিসাবধারী অন্য লিঙ্গের ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
প্রতিবেদন অনুসারে, আগের ত্রৈমাসিকের (২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) তুলনায় এই ত্রৈমাসিকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নারী হিসাবধারী ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ফলে পুরুষের সঙ্গে নারী হিসাবধারীর পার্থক্য কমে প্রায় সমান হয়ে গেছে। এক বছরে নারী হিসাবধারী বেড়েছে ২৫ শতাংশ। এই তথ্য বলছে, আনুষ্ঠানিক আর্থিক লেনদেনপ্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
ব্যাংক এশিয়া ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশে প্রথম মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনাসংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে।
এজেন্টরা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স, ছোট অঙ্কের ঋণদান, বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধে কাজ করে। পাশাপাশি এখান থেকে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর অর্থও তোলা যায়।
দেশে মোট ৬২টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে ৩১টি এজেন্ট ব্যাংকিং করছে। সারা দেশে ১৫ হাজার ৪০৯ এজেন্ট ও ২১ হাজার ৯৯ আউটলেট চালাচ্ছেন।
নারী হিসাবধারী কেন বাড়ছে
বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান মো. আহসান উল আলম গত ২৭ জুন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামের সামাজিক পরিস্থিতির কারণে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নারী হিসাবধারীর সংখ্যা বাড়ছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ব্যাংকিং হওয়ায় যাঁর হিসাব তাঁকে সরাসরি ব্যাংকে যেতে হয়।
আহসান উল আলম বলেন, বেশির ভাগ এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রামমুখী। সেখানে পুরুষেরা কাজে থাকেন। বাড়ির কাছে ব্যাংক হওয়ায় নারীরা লেনদেনে যুক্ত হচ্ছেন। আবার গ্রামে অনেক পুরুষ প্রবাসী, রেমিট্যান্স তুলতে স্ত্রীরা ব্যাংক হিসাব খুলছেন।
‘খয়রাত দেব না, এখন চলে যান’
২০১৪ সালে আলসিং আরিফা (৩০) সিরাজদিখানের রাজানগর ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে দুই কক্ষের ঘর তুলে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং শুরু করেন। শুরুতে অনেক কষ্ট হয়েছে জানিয়ে গত ২৭ জুন তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিনা পয়সায় ব্যাংক হিসাব খোলার লোক খুঁজে পেতাম না। একবার ব্যাংকের কোট–টাই পরা লোক নিয়ে গেছি। একজন তাড়িয়ে দিতে দিতে বললেন, “খয়রাত দেব না, এখন চলে যান।”’
আরিফা বলেন, শুরুতে ২০ লাখ টাকায় একটি আউটলেট করেন। পরে চিত্রকুট ইউনিয়নের চিত্রকুট গ্রাম ও মরিচাবাজারে আরও দুটি আউটলেট দেন। এখন তাঁর তিনটি আউটলেটে ২ হাজার ২০০ ব্যাংক হিসাব আছে, যার ৭০ শতাংশই নারীদের। এখন তাঁর স্বামী জাকির হোসেনেরও দুটি এজেন্ট ব্যাংক আছে।
উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের লাবণী আক্তার (৩১) মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বছর চারেক আগে আরিফার রাজানগর আউটলেটে হিসাব খোলেন। স্বামী আলমগীর হোসেন মালয়েশিয়ায় থাকতে ওই হিসাবে টাকা পাঠাতেন। তাঁর স্বামী দেশে ফেরার পর তিনি একই আউটলেটে হিসাব খুলেছেন। সম্প্রতি তাঁর স্বামী ঋণও নিয়েছেন। ঘরোয়া পরিবেশ আর মেয়েরা বেশি লেনদেন করেন বলে তিনি স্বাচ্ছন্দ৵বোধ করেন।
নারীরা ঋণ পাচ্ছেন কম
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মার্চ পর্যন্ত মোট আমানত প্রায় ৩১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। ঋণ দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা। রেমিট্যান্স এসেছে ১ লাখ ২১ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। ৮৬ শতাংশ আউটলেটই গ্রাম এলাকায়। আমানতের ৭৬ শতাংশই আসে গ্রাম থেকে। শহর–গ্রাম মিলে মোট আমানতের প্রায় ৩৫ শতাংশ নারীদের, ৫৭ শতাংশ পুরুষদের এবং বাকি ৮ শতাংশ অন্য লিঙ্গের মানুষদের। আগের তুলনায় এই ত্রৈমাসিকে আমানতের হার প্রায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণ দেওয়ার হার বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
তবে নারীদের ঋণ পাওয়ার হার খুবই কম। মার্চ পর্যন্ত মাত্র ১৩ শতাংশ নারীকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, নারীদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো আস্থা পায় না এবং গ্রামীণ উদ্যোগে নারীদের অংশগ্রহণ কম।
ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি মো. আরফান আলী এখন ‘অংকুর’ নামের একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। গত ১৮ জুন তিনি মহাখালীর কার্যালয়ে বসে প্রথম আলোকে বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে যত বেশি নারী যুক্ত হবেন, তত তাঁদের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। ব্যাংকিংয়ে মোট হিসাবের ৩৬ শতাংশ এখন এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত মার্চ পর্যন্ত এজেন্ট ও শাখা ব্যাংকসহ মোট হিসাবধারী ছিলেন ১৪ কোটির বেশি (অনেকের একাধিক ব্যাংক হিসাব রয়েছে)। এর মধ্যে নারী হিসাবধারীর আলাদা তথ্য নেই।
এখনো বৈষম্য প্রকট
গবেষণা ও নীতিসহায়ক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএফ) নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কামাল মুজেরী প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা ভাতা তুলতে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নারী হিসাবধারীর সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে প্রকৃতভাবে নারীর অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির স্বার্থে সেসব ব্যাংক হিসাব নিয়মিত ব্যবহার হতে হবে।
ব্যাংকিংয়ে নারী–পুরুষ বৈষম্য কমাতে এজেন্ট ব্যাংকিং একটা মাধ্যম হতে পারে। এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করে নারী এজেন্ট নিয়োগ, নারী হিসাবধারীর ব্যাংকিং জ্ঞান ও শিক্ষা বাড়ানো, অর্থ লেনদেনে নিজের ব্যাংক হিসাব চালানোর সক্ষমতা বাড়ানো এবং নারীবান্ধব ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলে নারীর অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে হবে।







Add comment