গাজীপুর মহানগরের সালনা এলাকায় বাড়িতে ঢুকে কলেজছাত্রী রাবেয়া আক্তারকে (২১) হত্যার ঘটনায় আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত একমাত্র আসামি গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলামকে (২৫) গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
এর আগে গত সোমবার রাতে সালনা এলাকায় রাবেয়া আক্তারের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে জখম করেন এক যুবক। এ সময় বাধা দিলে ওই ছাত্রীর মা ও তিন বোনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। রাবেয়ার মা বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাবেয়ার বাবা আবদুর রউফ বাদী হয়ে গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
নিহত রাবেয়া আক্তার গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। তিনি ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। অভিযুক্ত সাইদুল ইসলাম ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা মহেশতারা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে।
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, গতকাল সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলামকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকেই সাইদুলকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমদ্দি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে একটি শোরুমে চাকরি করেন। সেখানেই সপরিবার বসবাস করেন। ছোট দুই মেয়ের কোরআন শিক্ষার জন্য সাইদুল ইসলামকে গৃহশিক্ষক হিসেবে রাখেন আবদুর রউফ। এর মধ্যে রাবেয়াকে বিয়ে করার জন্য সাইদুল তাঁর পরিবারের কাছে প্রস্তাব দেন। তবে রাবেয়ার পরিবার সেই প্রস্তাব না করে দেয়। সাইদুলকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য মানা করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাইদুল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসায় ঢুকে ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথা, গলা, হাত ও পায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। তাঁর চিৎকারে মা ও দুই বোন দৌড়ে রাবেয়ার ঘরে গিয়ে দেখে সাইদুল ছুরি দিয়ে তখনো রাবেয়াকে ছুরিকাঘাত করছেন। এ সময় বাধা দিলে ছুরি দিয়ে তিনি অন্যদেরও আঘাত করে পালিয়ে যান।
রাবেয়ার বাবা আবদুর রউফ বলেন, ‘সাইদুল আমাদের গৃহশিক্ষক ছিল। ছোট দুই মেয়েকে সে কোরআন পড়াত। সে আমার বড় মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে আমরা সরাসরি না করে দিই। যার কারণেই সে বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’







Add comment