ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে ব্রাজিলে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আইনজীবীরা। তাঁদের মধ্যে আছেন সাতজন পেশাদার ফুটবলার। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ব্রাজিলে ২০১৮ সালে খেলাধুলায় জুয়া বৈধ করার পর এটিই সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি হতে পারে।
ব্রাজিলের গইয়াস প্রদেশের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, মোট ১৩টি ফুটবল ম্যাচ পাতানো হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে আটটি ম্যাচ গত বছর ব্রাজিলিয়ান লিগের। সান্তোস, জুভেন্তুদে ও কুইয়াবার মতো ক্লাবের খেলোয়াড়েরা ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল পাঁচজনকে নিষিদ্ধ করেছে তাঁদের ক্লাব।
রয়টার্স জানিয়েছে, সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) অভিযুক্ত খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল মন্তব্যের জন্য। কিন্তু খেলোয়াড়েরা কেউ কথা বলেননি। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কেউ মুখ খোলেননি।
যে পাঁচ খেলোয়াড় নিষিদ্ধ হয়েছেন, তাঁরা হলেন—পেদ্রিনিও (আতলেতিকো), ব্রায়ান গার্সিয়া (আতলেতিকো), রিচার্ড (ক্রুজেইরো), ভিতর মেন্দেজ (ফ্লুমিন্সে) ও নিনো পারাইবা (আমেরিকা)। গত বছর ব্রাজিলিয়ান লিগে খেলেছেন এই পাঁচ ফুটবলার। তাঁদের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম। খেলোয়াড়েরা ‘সর্বোচ্চ শাস্তি’ পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে আইনজীবীরা কিছুই জানাননি এপিকে। তবে বিবৃতিতে তাঁরা বলেছিলেন, মোট ১৬ জনকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে এবং তাঁদের মধ্যে ৭ জন খেলোয়াড়ও আছেন।
অভিযুক্ত এই খেলোয়াড়দের মধ্যে সান্তোসের ডিফেন্ডার এদুয়ার্দো বাউয়েরমান একজন। গত মঙ্গলবার তাঁকে নিষিদ্ধ করে ক্লাব। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো’ এই খেলোয়াড়ের পাতানো খেলার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দিয়ে কয়েকটি আলাপচারিতাও প্রকাশ করেছে।
মামলার অভিযোগপত্রে আইনজীবীরা দাবি করেন, একটি অপরাধী চক্র আইন লঙ্ঘন করতে খেলোয়াড়দের টাকা দিয়েছে। খেলোয়াড়দের যেভাবে বলে দেওয়া হয়, মাঠে তাঁরা সেভাবে কাজ করেন এবং সে ম্যাচের ফলের ওপর বাজি ধরে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। আইনজীবীরা দাবি করেছেন, খেলোয়াড়দের পাতানো খেলায় রাজি করতে তাঁদের সঙ্গে শুধু দেখা করার সময়ই প্রায় এক লাখ ডলার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কথা অনুযায়ী কাজ করার পর আরও টাকা পান খেলোয়াড়েরা।

সান্তোসের খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধেও পাতানো খেলার অভিযোগ উঠেছেছবি: টুইটার
ব্রাজিলের ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) দেশের প্রেসিডেন্ট ও বিচার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে পুলিশকে এই মামলার সঙ্গে জড়িত হওয়ার অনুরোধ করেছে। চলতি মৌসুমের লিগ বন্ধ করা যাবে না বলেও চিঠিতে জানিয়েছে সিবিএফ। সভাপতি এদনালদো রদ্রিগেজ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ফুটবলে সব ধরনের অপরাধ, জালিয়াতি ও অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমি বিভিন্ন ফেডারেশন, ফিফা ও ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলোর সঙ্গে কাজ করছি। অপরাধীরা ব্রাজিলিয়ান কিংবা বৈশ্বিক ফুটবলের অংশ নয়।’
ম্যাচ পাতানো বন্ধে তদন্তে নেমে গত এপ্রিলে ব্রাজিলের ৬টি প্রদেশ ও ১৬টি শহরে ব্যবসায়ী এবং খেলোয়াড়দের বাসায় অভিযান চালায় কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালে অনলাইনে জুয়া বৈধ করে ব্রাজিল। এর মধ্য দিয়ে খেলাধুলায়ও জুয়া বৈধতা পেয়ে যায়। তার পর থেকে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে জুয়ার রমরমা বাজার চলছে।







Add comment