Nazihar News Network
News from Nazihar It Solution

ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দ যেখানে জরুরি

কম্বোডিয়ায় গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচন এই বিভ্রম দূর করতে পারত যে দেশটিতে গণতন্ত্র দীর্ঘদিন আক্রমণের শিকার হয়েও নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের প্রচার থেকে শুরু করে ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়াকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে যে দেশটির ৯৭ লাখ নিবন্ধিত ভোটার তাঁদের রাজনৈতিক বিকল্প বেছে নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

এটি ভোটের নামে নিছক প্রহসন ছিল এবং ভোটের ফলাফল কী হবে, তা আগে থেকে সম্পূর্ণরূপে বোঝা যাচ্ছিল।  
হুন সেন ও তাঁর ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) এমন একটি প্রতিযোগিতায় ভূমিধস জয় পেয়েছে, যেখানে তাদের কোনো বিশ্বাসযোগ্য বিরোধিতার মুখেই পড়তে হয়নি।

৩৮ বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রাখা স্বৈরাচারী শাসক হুন সেনের হাত থেকে শাসনক্ষমতা তাঁর ছেলে হুন মানেতের হাতে হস্তান্তর করতেই মূলত নির্বাচন নামক নাটকটি মঞ্চস্থ করা হয়েছে।

২৩ জুলাই ভোট শেষ হওয়ার আগেই সবাই নিশ্চিত ছিল, হুন সেনের দল সিপিপি ‘বড় জয়’ পেতে যাচ্ছে। যা ধারণা করা হয়েছিল, তাই হয়েছে। সিপিপি কম্বোডিয়ার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ১২৫টি আসনের মধ্যে ১২০টি পেয়েছে।

সেখানে দমন–পীড়নের মাত্রা ব্যাপক। ভোটারদের মধ্যে যাঁরা প্রতিবাদ হিসেবে ব্যালট পেপার ছিঁড়ে বাক্সে ভরেছেন, তাঁদের সরকার খুঁজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। যাঁর বিরুদ্ধে ব্যালট ছেঁড়ার অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাঁকে হয় জেলে যেতে হবে, নয়তো মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে।

কম্বোডিয়ায় গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচন এই বিভ্রম দূর করতে পারত যে দেশটিতে গণতন্ত্র দীর্ঘদিন আক্রমণের শিকার হয়েও নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের প্রচার থেকে শুরু করে ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়াকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে যে দেশটির ৯৭ লাখ নিবন্ধিত ভোটার তাঁদের রাজনৈতিক বিকল্প বেছে নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

এটি ভোটের নামে নিছক প্রহসন ছিল এবং ভোটের ফলাফল কী হবে, তা আগে থেকে সম্পূর্ণরূপে বোঝা যাচ্ছিল।  
হুন সেন ও তাঁর ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) এমন একটি প্রতিযোগিতায় ভূমিধস জয় পেয়েছে, যেখানে তাদের কোনো বিশ্বাসযোগ্য বিরোধিতার মুখেই পড়তে হয়নি।

৩৮ বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রাখা স্বৈরাচারী শাসক হুন সেনের হাত থেকে শাসনক্ষমতা তাঁর ছেলে হুন মানেতের হাতে হস্তান্তর করতেই মূলত নির্বাচন নামক নাটকটি মঞ্চস্থ করা হয়েছে।

২৩ জুলাই ভোট শেষ হওয়ার আগেই সবাই নিশ্চিত ছিল, হুন সেনের দল সিপিপি ‘বড় জয়’ পেতে যাচ্ছে। যা ধারণা করা হয়েছিল, তাই হয়েছে। সিপিপি কম্বোডিয়ার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ১২৫টি আসনের মধ্যে ১২০টি পেয়েছে।

সেখানে দমন–পীড়নের মাত্রা ব্যাপক। ভোটারদের মধ্যে যাঁরা প্রতিবাদ হিসেবে ব্যালট পেপার ছিঁড়ে বাক্সে ভরেছেন, তাঁদের সরকার খুঁজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। যাঁর বিরুদ্ধে ব্যালট ছেঁড়ার অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাঁকে হয় জেলে যেতে হবে, নয়তো মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে।

ভোটের সময় যেসব নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম হুন সেনের বিরুদ্ধে বলেছে, সেগুলোকে ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

হুন সেনের লোকজন প্রকাশ্য ভোট জালিয়াতি করার পরও আমার সাবেক রাজনৈতিক দল কম্বোডিয়া ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টি (সিএনআরপি) গত ২০১৫ ও ২০১৭ সালের নির্বাচনে ৪৩ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল। আমাদের মতো বিরোধীদের উপস্থিতি এবং বিদ্যমান প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্য যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশের জন্য ‘স্বাস্থ্যকর’ বিষয় হবে।

কিন্তু হুন সেনের চোখে আমরা বিরাট হুমকি ও ঝুঁকি হয়ে উঠলাম। ফলে আমার দেশের কালো ইতিহাসে অন্য অনেক বিষয়ের মতো আমরাও হারিয়ে গেলাম। ‘বিদেশিদের নিয়ে অভ্যুত্থান’ ঘটানোর চেষ্টা করার অভিযোগ তুলে আমাদের রাজনৈতিক দলকে বাতিল ঘোষণা করা হলো।

একই ধরনের পরিণতি ভোগ করতে হলো ক্যান্ডেল-লাইট পার্টিকে।

এই দল নতুন হলেও তুমুল জনপ্রিয় ছিল। দলটি সিপিপিকে বিপদে ফেলতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে গত মে মাসে দলটিকে নির্বাচনে দাঁড়ানোর অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। দলটিকে প্রার্থী দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং তার কারণ হিসেবে সরকারের দিক থেকে বলা হয়েছে, ‘দলটি কাগজপত্রের মূল কপি না দিয়ে ফটোকপি জমা দিয়েছে।’

এ কারণে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। আসলে এই নতুন দলটিকে আগেই সরকারের দিক থেকে নিশানায় রাখা হয়েছিল। সে অনুযায়ী তাদের ধরাশায়ী করা হয়েছে।

এমনকি এই পটভূমিতেও জনগণ শান্তিপূর্ণ বিরোধিতা প্রকাশের একটি উপায় খুঁজে পেয়েছিল। জাতীয় গণনায় দেখা গেছে, জরিমানা বা গ্রেপ্তারের হুমকি সত্ত্বেও পাঁচ লাখের বেশি কম্বোডিয়ার ভোটার তাঁদের ব্যালট ছিঁড়ে ভোটবাক্সে ফেলেছেন।

এর মানে এই নির্বাচনে প্রতি ১৮ জনে একজন ব্যালট ছিঁড়েছেন। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, সিপিপির বিকল্প একটি গণতান্ত্রিক দল পাওয়ার জন আকাঙ্ক্ষাকে সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখতে পারবে না।

এই গ্রীষ্মের শেষের দিকে হুন সেন প্রধানমন্ত্রিত্ব তাঁর ছেলে হুন মানেতের হাতে তুলে দেবেন। তবে তার আগেই হুন সেনের অনুগত অনেক মন্ত্রীর ছেলেমেয়ে তাঁদের বাবা–মায়ের গদিতে বসছেন। এসব নতুন মন্ত্রীদের বেশির ভাগই অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। তাঁরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পৈতৃক সম্পত্তির মতো ক্ষমতা দখল করেছেন।

এই অবস্থায় আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় হুন সেন ও তাঁর ছেলে হুন মানেতের অপশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া পশ্চিমাদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। এই দুঃশাসনের অবসান শিগগিরই হবে বলে মনে হয় না। আমরা অচিরেই অভিজাত ও ক্ষমতাধর গোষ্ঠীগুলোকে নিজেদের গদি বাছাই করে বসতে দেখব।

এই গ্রীষ্মের শেষের দিকে হুন সেন প্রধানমন্ত্রিত্ব তাঁর ছেলে হুন মানেতের হাতে তুলে দেবেন। তবে তার আগেই হুন সেনের অনুগত অনেক মন্ত্রীর ছেলেমেয়ে তাঁদের বাবা– মায়ের গদিতে বসছেন। এসব নতুন মন্ত্রীদের বেশির ভাগই অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। তাঁরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পৈতৃক সম্পত্তির মতো ক্ষমতা দখল করেছেন।

এ মুহূর্তে কম্বোডিয়ার মানুষ গণতন্ত্রের জন্য মুখিয়ে আছে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। সাধারণ মানুষের চাওয়া অনুযায়ী দেশটিতে পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনে ক্ষমতাসীন সিপিপির যে নেতারা দেশটির গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে উদ্যত হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

  • আল–জাজিরা থেকে নেওয়া
    ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিতভাবে অনূদিত
    মু সোচুয়া কম্বোডিয়ার সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য এবং কম্বোডিয়া ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.