ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭ জনের পরিবারের সদস্যদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস। গতকাল রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বার্তায় কিরিয়াকোস আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা ওই বার্তায় গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি প্রত্যেকের কাছে দায়বদ্ধ। তবে বিশেষ করে যাঁরা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, তাঁদের স্বজনদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
ওই বার্তায় কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস আরও লেখেন, ‘২০২৩ সালের গ্রিসে দুটি ভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন একই লাইন দিয়ে চলাচল করতে পারে না। এত বড় একটি বিষয় কেউ খেয়াল করল না।’
স্থানীয় সময় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে গ্রিসের লারিসা শহরের কাছে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী একটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে ৫৭ জন নিহত হন। আহত হন আরও অন্তত ৬৬ জন।
লারিসা শহরের কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীবাহী ট্রেনটি গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শহর থেসালোনিকি যাচ্ছিল। আর মালবাহী ট্রেনটি থেসালোনিকি থেকে লারিসা যাচ্ছিল।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে প্রায় ৩৫০ জন আরোহী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর প্রায় ২৫০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ দুর্ঘটনার পর গ্রিসের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। গতকাল রাজধানী এথেন্সে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে।
বিক্ষোভকারীরা দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে শত শত কালো বেলুন ওড়ান। কারও কারও হাতে ‘খুনি সরকার নিপাত যাক’ লেখা প্ল্যাকার্ডও ছিল। এ দুর্ঘটনার পর গ্রিসের রেলওয়ে খাতে সরকারের অবহেলাকে দোষারোপ করে রেলকর্মীরা এক দিনের ধর্মঘটও পালন করেছেন।
জনগণের ক্ষোভ কমাতে এবার ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইলেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস। এর আগে ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য মানবিক ত্রুটিকে দায়ী করেছিলেন তিনি।
দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদ ছেড়েছেন গ্রিসের অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। গত বুধবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। কারামানলিস বলেছিলেন, ‘এমন মর্মান্তিক ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন কিছু না ঘটার ভান করে কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। আমি এ ব্যর্থতার দায় নিচ্ছি এবং পরিবহনমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিচ্ছি।’







Add comment