Nazihar News Network
News from Nazihar It Solution

বিশ্বে খাদ্যের দাম টানা ১২ মাস ধরে কমছে, তবে সব দেশে এর সুফল মিলছে না

মার্চ মাসে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) খাদ্যের মূল্যসূচক কমেছে। এ নিয়ে টানা এক বছর এই সূচকের মান কমল। গত বছরের মার্চ মাসে এই সূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর চলতি মার্চ মাসে তার মান ২০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু সবখানে তার প্রভাব অনুভূত হচ্ছে না।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, মার্চ মাসে এফএওর খাদ্য মূল্যসূচক ১২৬ দশমিক ৯- নেমে এসেছে। রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চ মাসে এ সূচক রেকর্ড ১৫৯ দশমিক ৭ পয়েন্টে উঠেছিল। এরপরের চার মাসেও এর মান ১৫০-এর ওপরে ছিল। গত জুলাই মাসে তা ১৪০-এর ঘরে নেমে আসে।

মার্চ মাসে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) খাদ্যের মূল্যসূচক কমেছে। এ নিয়ে টানা এক বছর এই সূচকের মান কমল। গত বছরের মার্চ মাসে এই সূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর চলতি মার্চ মাসে তার মান ২০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু সবখানে তার প্রভাব অনুভূত হচ্ছে না।
রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, মার্চ মাসে এফএওর খাদ্য মূল্যসূচক ১২৬ দশমিক ৯- নেমে এসেছে। রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চ মাসে এ সূচক রেকর্ড ১৫৯ দশমিক ৭ পয়েন্টে উঠেছিল। এরপরের চার মাসেও এর মান ১৫০-এর ওপরে ছিল। গত জুলাই মাসে তা ১৪০-এর ঘরে নেমে আসে।

বিশ্ববাজারে খাদ্যের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বছরব্যাপী চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে খাদ্যের চাহিদা কমেছে এবং কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য পরিবহনে রাশিয়া-ইউক্রেনের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে।
এফএও বলছে, দানাদার শস্য, উদ্ভিজ্জ তেল ও দুগ্ধজাত খাবারের দাম কমার কারণে খাদ্যসূচক কমেছে। এসবের দাম কমার কারণে চিনি ও মাংসের বাড়তি দামের প্রভাব বাজারে অতটা পড়েনি।

এফএওর প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো তোরেও এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমলেও দেশে দেশে তা এখনো বেশি এবং এখনো তা বাড়ছে। এ কারণে খাদ্যনিরাপত্তার জন্য তা বাড়তি চ্যালেঞ্জের কারণে হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
বিশেষ করে যেসব দেশ স্থানীয় উৎপাদনের চেয়ে বেশি খাদ্য আমদানি করে, তাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ বলে মন্তব্য করেন ম্যাক্সিমো তোরেও। তিনি বলেন, এসব দেশে ঋণের বোঝা এবং ডলার বা ইউরোর বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে খাদ্যের দাম বাড়তি।

বাংলাদেশেও খাদ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। মার্চ মাসে দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৯। আগের মাসে যা ছিল ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষকে, কারণ খাদ্যের দাম বাড়ায় তারাই সবচেয়ে ভুক্তভোগী।
দেশের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম ২০২২ সালে নিজস্ব গবেষণার ভিত্তিতে বলেছিল, শহরের প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলো গড়ে মোট খরচের ৬১ দশমিক ৩১ শতাংশ খাদ্যের পেছনে ব্যয় করে। গ্রামীণ প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলো করে ৬৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। বিবিএস এ ক্ষেত্রে যে হিসাব দেয়, সে তুলনায় এ হার অনেক বেশি।
সে জন্য সানেম মনে করে, শহর ও গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি।

বিশ্বে খাদ্যের দাম টানা ১২ মাস ধরে কমছে, তবে সব দেশে এর সুফল মিলছে না
রয়টার্স

এদিকে এফএওর সূচক অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে দানাদার শস্যজাতীয় খাবারের মূল্যসূচক কমেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, গমের ৭ দশমিক ১, ভুট্টার ৪ দশমিক ১ এবং চালের দাম কমেছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
এ ছাড়া উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্যসূচক কমেছে ৩ শতাংশ। ২০২২ সালের মার্চ মাসের তুলনায় যা ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। দুগ্ধজাত খাদ্যের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।

এর বিপরীতে চিনির মূল্যসূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ– ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের পর যা সর্বোচ্চ। চীন, ভারত ও থাইল্যান্ডে চিনির উৎপাদন কমার উদ্বেগে সূচক কিছুটা বেড়েছে। মাংসের মূল্যসূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।
এদিকে দানাদান খাদ্যশস্যের উৎপাদন ও সরবরাহবিষয়ক আরেক প্রতিবেদনে এফএও ২০২৩ সালে বিশ্বের গম উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাস বৃদ্ধি করেছে। তারা বলেছে, এ বছর গম উৎপাদন হতে পারে ৭৮৬ মিলিয়ন বা ৭৮ কোটি ৬০ লাখ টন। ২০২২ সালের তুলনায় তা ১ দশমিক ৩ শতাংশ কম হলেও এই উৎপদান যথেষ্ট।

বিশ্বে খাদ্যের দাম টানা ১২ মাস ধরে কমছে, তবে সব দেশে এর সুফল মিলছে না
রয়টার্স

রেকর্ড দামের বছর ২০২২
রয়টার্সের আরেক সংবাদে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের পর ২০২২ সালে বিশ্বে খাদ্যের দাম ছিল সবচেয়ে বেশি।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা প্রতি মাসেই খাদ্যের মূল্যসূচক প্রকাশ করে থাকে। তাতে দেখা গেছে, ২০২২ সালে এফএও’র খাদ্যে মূল্যসূচকের গড় মান ছিল ১৪৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট। ১৯৯০ সালে এফএও মূল্যসূচক প্রবর্তন করার পর এটি ছিল সর্বোচ্চ।

সূচক অনুযায়ী, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে খাদ্য মূল্যসূচকের মান ১৮ পয়েন্ট বেড়েছে। ফলে ২০২২ সালে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ৩ শতাংশে ওঠে। সব দেশে খাদ্যের দাম একই হারে বাড়েনি। আবার খাদ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যেসব দেশে একইভাবে পড়েছে, তা-ও নয়। অনেক দেশ আমদানি শুল্ক হ্রাস করে দাম সমন্বয় করেছে।

Add comment

Follow us

Don't be shy, get in touch. We love meeting interesting people and making new friends.